Skip to content

৯ টি ওজন কমানোর সহজ উপায় | Natural weight loss tips in Bangla

woman measuring waist with tape in gym

পৃথিবীর অধিকাংশ পুরুষ ও মহিলা উভয় এর ওজন বাড়ার ধাত আছে। ওজন বাড়ার ফলে ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল এর মত ভয়াবহ রোগ শরীরে বাসা বাঁধে।

ইউটিউব ও গুগোলে অনেক রকম ওজন কমানোর উপায় বলা আছে কিন্তু ওজন কমানো একটা বেশ চ্যালেঞ্জিং ব্যাপার। একদিন বা এক সপ্তাহে ওজন কমানোর পদ্ধতি গুলো অনেক সময় কাজ দেয় না।

প্রকৃতির বিরুদ্ধে গিয়ে যেকোনো ওষুধ, সাপ্লিমেন্ট অথবা বেল্ট ইত্যাদির সাহায্যে ওজন কমানোর পদ্ধতি অনেক সময় বিপরীত ফল দেয় এবং শারীরিক নানা অসুবিধার সৃষ্টি হয়।

তাই নিচে কিছু স্বাভাবিক ও সহজ পদ্ধতি দেওয়া আছে যাতে আপনি প্রাকৃতিক উপায়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন।

  1. খাবারের প্রোটিনের মাত্রা বাড়ান
  2. সিঙ্গেল ইনগ্রিডিয়েন্ট খাবার খান
  3. প্রসেসড বা ক্যান্ড ফুড একদম নয়
  4. ভিশন অল্প পরিমাণ মিষ্টি
  5. হেলথি স্নাক্স খান
  6. বেশি করে জল খান
  7. পর্যাপ্ত ঘুম
  8. এক্সারসাইজ অথবা যোগ ব্যায়াম
  9. হেলদি ড্রিংকস খান

চলুন এই স্বাভাবিক ও সহজ পদ্ধতি গুলি বিস্তারিত ভাবে জানা যাক…

১. খাবারের প্রোটিনের মাত্রা বাড়ান

আমরা অনেক সময় একটু ভুল ধারণায় বাস করি যে ডায়েট বা অতিরিক্ত খাবার কম খেলে আমাদের রোগা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু ধারণাটি একেবারেই ভুল।

কারণ সঠিক মাত্রায় খাবার না খেলে আমাদের শরীরের বেশিরভাগ অংশই মেদ জমতে থাকে।

তাছাড়াও শরীরে পুষ্টিকর খাদ্যের অভাব হলে শরীরের ইমিউনিটি কমে যায় এবং আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ি। তাই খাবারে প্রোটিনের মাত্রা বাড়ানো উচিত যাতে শরীর ফিট থাকে।

২. সিঙ্গেল ইনগ্রিডিয়েন্ট খাবার খান

সিঙ্গেল ইনগ্রিডেন্ট ফুড অর্থাৎ সেই খাবারগুলো খান যেগুলি processed করা নয়। অর্থাৎ বাড়িতে তৈরি করা রুটি ডাল ভাত শাকসবজি ইত্যাদি খেতে পারেন।

শরীর ফিট রাখার জন্য সব রকম পুষ্টি দরকার তাই ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ, ডিনার মিলিয়ে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, মিনারেল সবকিছু মিলিয়ে মিশিয়ে খেতে পারেন।

ডায়েটের দিকে বেশি নজর দিতে চাইলে আপনি সাদা ভাতের বদলে ব্রাউন রাইস খেতে পারেন। অথবা ময়দার ব্রেড এর বদলে ব্রাউন ব্রেড ও খেতে পারেন।

মনে রাখবেন আমাদের শরীরের সব রকমের খাবার দরকার কিন্তু একই সময়ে অনেকটা পরিমাণ করে খাবেন না। ২৪ ঘন্টায় বারে অনেকবার খাবেন কিন্তু প্রত্যেকবারই স্বল্প পরিমাণে খাবেন।

আরো পড়ুন: পা এর গোড়ালি ফাটা দূর করার ৫ কার্যকরী ঘরোয়া উপায়

৩. প্রসেসড বা ক্যান্ড ফুড একদম নয়

আমরা নিজেদের জীবনে এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছি যে সাধারণত আমরা সময় বাঁচানোর জন্য রান্নাবান্না করি না। অধিকাংশ সময়ই আমরা কেনা খাবার খাই যা সাধারণত প্রসেসড বা canned ফুড হিসেবে পরিচিত।

তবে এই রকম খাবার খাওয়া শরীরের পক্ষে অতিরিক্ত অস্বাস্থ্যকর। যদি আপনি ওজন কমানোর জন্য তৎপর হোন,তবে এই প্রসেসড ফুড খাওয়া একেবারেই বর্জন করতে হবে তাহলে ওজন কমানোর জন্য আপনি ফল পাবেন।

৪. ভিশন অল্প পরিমাণ মিষ্টি

খাবারে কার্বোহাইড্রেট এর পরিমান বেশি হলে ওজন খুব দ্রুত বাড়তে থাকে। আমরা বাঙালিরা যতটাই মিষ্টি ভক্ত হই না কেন, শরীরের সুগঠন পাওয়ার জন্য লোভনীয় মিষ্টি আমাদের ত্যাগ করতেই হবে।

এমনিতেও খাবারে মিষ্টির পরিমাণ বেড়ে গেলে পরে তা ডায়াবেটিসে পরিণত হয়।

চকলেট, ক্যান্ডি, আইসক্রিম, চা, কফি বা খাবারে অতিরিক্ত মাত্রায় চিনি ওজন কমাতে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। মাসে একবার কি দুবার আপনি মিষ্টি খেতে পারেন তবে মনে রাখবেন তা যেন মাত্রাতিরিক্ত না হয়।

আপনাদের পরিবারে যদি মিষ্টি খাওয়ার প্রবণতা একটু বেশি থাকে তবে আপনারা চিনির বদলে খাবারের মধু ব্যবহার করতে পারেন|

আরো পড়ুন: প্রচণ্ড গরমে ঘরে অতিষ্ঠ হচ্ছেন? জেনে নিন এসি ছাড়াই ঘর ঠান্ডা রাখার সেরা উপায়

৫. হেলথি স্নাক্স খান

দিনে তিনটে মিলের পাশাপাশি আমরা মাঝে মাঝে স্ন্যাক্স খেয়েই থাকি। স্নাক্স আমরা বরাবরই খাই অল্প পরিমাণে।

pastry and boiled egg on plate
Photo by Foodie Factor on Pexels.com

তবে ওজন কমাতে গেলে আমাদের পুষ্টিযুক্ত স্নাক্স খেতে হবে। অর্থাৎ চিপস, চানাচুর অথবা তেলেভাজা খাওয়া চলবে না।

ওজন কমাতে গেলে আপনারা খেতে পারেন সুজির হালুয়া, ওটস, ব্রাউন ব্রেড, শসা দিয়ে মুড়ি, ডিম সেদ্ধ ইত্যাদি।

৬. বেশি করে জল খান

ওজন কমানোর জন্য একটি মূল চাবিকাঠি হল বেশি পরিমাণে জল খাওয়া। জল আমাদের শারীরিক ভাবে অনেক উপকারী হয়।

জল আমাদের সিস্টেম ক্লিয়ার করে এবং সমস্ত রকম জমে থাকা টক্সিন শরীর থেকে বের করে দেয়। দিনে আড়াই থেকে তিন লিটার জল খাওয়া উচিত। তাতে আপনার তৃষ্ণা মিটবে ও শরীরের মেটাবলিজম ঠিক রাখতে সাহায্য করবে।

যাদের খিদে পাওয়ার একটু বেশি প্রবণতা থাকে তারা বেশি করে জল খাবেন। জল খেলে আপনার পেট ভরা থাকবে। তবে জলের বদলে তৃষ্ণা মেটাতে কোনরকম সফট ড্রিংকস অথবা চিনির শরবত খাবেন না।

এতে আপনার শরীরে ক্যালোরি বাড়বে

৭. পর্যাপ্ত ঘুম

আমাদের শরীরের ওজন কে নিয়ন্ত্রনে রাখার জন্য ঘুমন্ত নিতান্তই প্রয়োজন। তবে সঠিক বয়সে সঠিক সময়কাল ঘুম আমাদের শরীরের ওজন ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

ভালো ঘুম না হলে সারাদিন অনেক ক্লান্তি আসবে এবং আপনার কোন কাজেই মন বসবে না এবং তা ঠিক হবে না। এর ফলে আপনার অলসতা বাড়বে ও আপনি ওবেসিটির শিকার হবেন।

তাই ওজন কমাতে ঠিক সময় মতো ঘুমান, পর্যাপ্ত ঘুমান ও সকাল বেলা তাড়াতাড়ি উঠুন।

৮. এক্সারসাইজ অথবা যোগ ব্যায়াম

শরীরের ওজন কমাতে দিনের একটুখানি সময় আপনাকে কিছু শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে। যোগাসন, এরোবিক্স, জিম অথবা এক্সারসাইজ ওজন কমানোর জন্য কার্যকরী।

দিনে অন্তত ১ ঘন্টা নিয়মিত কার্ডিও, জগিং, সাঁতার অথবা এক্সারসাইজ করে স্থূলতা কমাতে সক্ষম হয়েছেন অনেক মানুষ। যে কোনো রকমের ব্যায়াম শরীরের ওজন দ্রুত কমাতে সাহায্য করে।

৯. হেলদি ড্রিংকস খান

অনেক পানীয় আছে যা শরীরের ওজন কমাতে অতিরিক্ত প্রয়োজনীয় হয়ে ওঠে| দেখা গেছে গ্রিন টি ক্যালরি বার্ন করার জন্য মুখ্য জিনিস।

গ্রীন টিতে অনেক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যা মেদ কমাতে সাহায্য করে।

এছাড়াও আপনি লেবু এবং আদার চা খেতে পারেন, অথবা লেবু মধুর উষ্ণ গরম জল, মৌরি বা জিরা জল শরীরের স্থূলতা কমাতে অনেক কার্যকরী হয়েছে।

আপনি যদি এই সমস্ত পদ্ধতি নিয়মিত মেনে চলতে পারেন তাহলে আপনি দেখবেন আপনি আপনার ওজন অনেক তাড়াতাড়ি কমিয়ে ফেলেছেন।

ওজন কমানো একটু কঠিন হতে পারে, কিন্তু আপনি যদি এইসব রাস্তা অবলম্বন করে ওজন কমিয়ে ফেলতে পারেন, তাহলে আপনি দেখবেন আপনি অনেক শারীরিক অসুস্থতা থেকে দূরে থাকবেন ও নিজেকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে পারবেন।


[ Facebook এ update পেতে লাইক করুন আমাদের page ]

লেটেস্ট খবর পড়ুন