কলকাতা শহর মানেই ধরে নিতে পারেন বিভিন্ন সংস্কৃতির মেলবন্ধন। তেমনি এক ছোট্ট জায়গা আছে কলকাতা শহরের, ট্যাংরা যেখানে চীনাদের বসবাস।
যদিও এটা খুব একটা অবিশ্বাস্যকর কিছুই না। তবে এটা শুনলে নিশ্চয় অবাক হবেন যে এই স্থানে রয়েছে এক কালীবাড়ি যেখানে মা কালী কে আরাধনা করা হয় চীনাদের আদলে।
আরও বিস্ময়কর ঘটনা এই যে নামেই যে মন্দিরটি চীনা কালী মন্দির শুধু তাই নয়, ভক্তদের প্রসাদ হিসেবে দেওয়া হয় নুডুলস।
যারা ধর্ম ও সংস্কৃতি নিয়ে অনুসন্ধান করেন তারা হয়তো স্বাভাবিক ভাবে কোনো তফাৎ দেখতে পাবেন না কিন্তু বাঙ্গালীদের দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে দেখলে বোঝা যাবে কতটা গর্বের ও সুন্দর বিষয় এইরকম একটি অন্যতম মন্দির ও মা কালির পুজো।
এই মন্দিরের নির্মাণ নিয়ে অনেক কাহিনী আছে।
![](https://bengali.dreamtrix.com/wp-content/uploads/2021/11/chinese-kali-temple-kolkata.jpeg)
৭০ বছর পূর্বে, লোকালয়ের মানুষরা একটি পাথর আরাধনা করতো সিঁদুর ও বিল্লপত্র দিয়ে। ঠিক তখনই একটি ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়ায় অলৌকিক ভাবে সুস্থ্য হয়ে ওঠে যেখানে ডাক্তার বদ্যি ও সমস্ত আশা ত্যাগ করেছিলেন।
এলাকার হিন্দু মানুষগণ সেই পাথরকেই আরাধনা করাই সেরে উঠেছিল সেই বালক। এই বিশ্বাস আরো দৃঢ় হলো যখন চীন সম্প্রদায়ের মানুষ সেখানে এসে মন্দির বানিয়ে পুজো শুরু করলেন।
যদিও ট্যাংরা তে বৌদ্ধ ধর্মীয় ও খ্রীষ্ট ধর্মীয় মানুষ বেশি, তবে কালীপুজোর সময় চীন ধর্মীয় বিশিষ্ট পুজোতে সবাই অংশগ্রহণ করেন।
গ্রানাইট পাথরের তৈরি মন্দির নির্মাণ হয়েছিল ১৯৯৮ সালে। এই মন্দিরের নির্মাণ করার জন্য একটি চীন পরিবার সমস্ত অর্থ দান করেছেন।
মন্দির নির্মাণের জন্য মহাকালীর মূর্তির পাশে মানুষ এখানে একটি মহাদেব এবং একটি ছোট কালী মূর্তি দেখতে পাবেন।
এখানে চীনরা সন্ধ্যা আরতির সময় কাগজের তৈরি মোমবাতি তৈরি করে ও তা দিয়ে শয়তান আত্মাদের তাড়িয়ে দেওয়া হয় বলে মনে করা হয়।
চীন ও বাঙালির ধর্মীয় সঙ্গম দিয়ে গড়ে ওঠা পুণ্যস্থানে দীপাবলির সময় অনেক ভক্তদের আহ্বান ঘটে। কালী পূজার সময় ভক্তদের মাঝে প্রসাদ দেওয়া হয় চপ সু, রামেন নুডলস এবং চিনা ভাত যা ভারতের অন্য কোথাও পাওয়া যায় না।
চাইনা কালীবাড়ির পুজো তে ধর্মীয় অনুষ্ঠান এর গভীরতা বুঝতে পারবেন না যতক্ষণ না এখানে কেউ মন প্রাণ দিয়ে দাঁড়িয়ে মহাকালীর আরাধনা দেখবে চীনাদের হাতে।
কলকাতার একদম হৃদয় এ অবস্থিত চায়না টাউন বিশ্বাস, ভক্তি ও শ্রদ্ধার আতুরঘর।
মূর্তি থেকে প্রসাদ সবকিছুই যেন অন্যতম যা চীনা কালীবাড়ি কে একটি ধর্মীয় সমন্বয় স্থান হিসেবে পরিচিতি দেয়।
ভ্রমণ সম্পর্কিত আরো আর্টিকেল পড়ুন
- শুরু হতে চলেছে হাওড়া পুরী বন্দে ভারত এক্সপ্রেস – জেনে নিন সময়সূচি
- ৫টি অসাধারণ হিন্দু মন্দির যা ভারতের বাইরে অবস্থিত
- ভক্তদের মনস্কামনা পূর্ণ করেন বিশাল আকার এই দক্ষিণা কালী
- কলকাতার এই কালী বাড়িতে প্রসাদ হিসাবে দেওয়া হয় নুডুলস
- মর্তেই আছে এই “স্বর্গের প্রবেশদ্বার” – খুব কম খরচে যেতে পারেন আপনিও
- এই সরোবর এ গেলেই দেখতে পাবেন ১৬৭ প্রজাতির পদ্ম ফুল – জেনে নিন কোথায়