Skip to content

ভক্তদের মনস্কামনা পূর্ণ করেন বিশাল আকার এই দক্ষিণা কালী

নৈহাটিতে আছে এমন এক মন্দির যেখানে দক্ষিণা কালী পূজিত হয় বড়মা রূপে।

কৃষ্ণ বর্ণ, মুক্ত কেশী, ভয়ংকরী চোখ দিয়ে আগুনের ছটা দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ছে, অলঙ্কারে মোড়া সমস্ত দেহ – চোখ জুড়িয়ে যাওয়ার মত রূপ নৈহাটির বড় মার।

নৈহাটির বড়মার মন্দির কি ভাবে পৌঁছাবেন (How to Reach)

হাওড়া থেকে বড়মা মন্দির পৌঁছানোর জন্য হাওড়া থেকে বাস ধরে চলে যান BR Singha hospital তারপর হেঁটে চলে যান শিয়ালদাহ স্টেশনে। তারপর শিয়ালদাহ – শান্তিপুর লোকাল ট্রেনে করে পৌঁছে যাবেন নৈহাটি জংশন। তারপর ১০ মিনিট হেঁটে পৌঁছে যাবেন বড়মার মন্দির।

প্রাইভেট গাড়িতে করে গেলে ব্যারাকপুর ট্রাংক রোড এবং কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে গেলেই পৌঁছে যাবেন নৈহাটি। ভুবনমোহন মুখার্জী লেন হয়ে পশ্চিম দিকে গেলেই পাবেন নৈহাটি বড়মার মন্দির।

নৈহাটির বড়মার মন্দিরের ইতিহাস (History)

Srijeet1988, CC BY-SA 3.0, via Wikimedia Commons

৯৪ বছর আগে ভবেশ চৌধুরী এবং তার সঙ্গীরা নবদ্বীপ গিয়েছিলেন রাস উৎসব এর দর্শন করতে।

সেই স্থানে গিয়ে তিনি রাধাগোবিন্দর বিশাল মূর্তি দেখে তাঁর ও মনের ইচ্ছে জাগে সেও ও একটি বড় কালী মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে পুজো করবেন।

নৈহাটি ফিরে এসে তিনি ২১ ফুট এর বড় কালী মূর্তি বানিয়ে পুজো শুরু করেন। মায়ের মূর্তি বিরাট উচ্চতার জন্যেই “বড়মা” হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

নৈহাটির বড়মার পুজোর বিস্তারিত তথ্য

কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর দিন কাঠামো পুজো করা হয়। দেবীকে সাজানো হয় ২০০ ভরী রূপো ও ১০০ ভরী সোনার।

মায়ের মুখ মন্ডল ও দেহে মুকুট, চাঁদ মালা, মল রুপোর তৈরী ও জিহবা, ত্রিনেত্র, নাক,ভুরু, ও চন্দন আঁকা সোনার তৈরী।

পশ্চিমবঙ্গ থেকে বড়মার টানে আসেন অনেক ভক্ত এবং তাদের দানের পয়সায় পুজোর আয়োজন করা হয় কোনো চাঁদা ছাড়াই।

দক্ষিণা কালী রূপে পূজিত হয় মা তাই বলি দেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। চক্রবর্তী বাড়ি থেকে অনেক ভোগ ও প্রসাদ বিলি করা হয়।

অনেক ভক্তরা মাকে মানত করেন ও দন্ডি কাটেন। মন ইচ্ছা পূরন হলেই ভক্তরা আবার মাকে অলঙ্কার গড়িয়ে দেন।

মায়ের কাছে পুজোর জন্যে যা ফল, কাপড় আসে তা অনাথ আশ্রম, বৃদ্ধাশ্রমেও বিলি করা হয়।

৪০০০-৫০০০ কিলোর ভোগ রান্না করা হয় এই স্থানে। বড়মার পুজোর সমস্ত রান্না করা হয় গাওয়া ঘিতেই। তাছাড়া ১১ টা অমাবশ্যার রাতে মাকে পুজো করা হয় যেখানে ৭০০ কেজির ভোগ রান্না করা হয় প্রতিবার।

পুজোর সময় পাওয়া শাড়ী বিলি করা হয় দুঃস্থদের মধ্যে এবং যদি বেনারসি শাড়ী পায় সেটি গরীব অবিবাহিত মেয়েদের জন্যে দেওয়া হয়।

বড়মার কাছে দেওয়া ফল ও ফুল বিতরণ করা হয় হাসপাতালের মানুষদের মধ্যে।

নৈহাটির বড়মার বিসর্জন

প্রতিমা বিসর্জনও হয় অভিনব ভাবে। বড়মার বিসর্জনের আগে নৈহাটির অন্য প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়না।

মায়ের ও শিবের চক্ষু ছাড়া অন্য সমস্ত গয়না খুলে নিয়ে ফুলের গয়না দিয়ে সাজানো হয় মাকে।

ট্রলি করেই মাকে গঙ্গায় বিসর্জন দেওয়া হয়।

বড়মা সবার মনের ইচ্ছে পূরণ করেন ও এই টানেই প্রতি বছর ফিরে আসেন বহু ভক্ত।


আরো লেটেস্ট খবর পড়ুন