গ্রীষ্মের দাবদাহ ক্রমশ বেড়ে চলেছে, তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে অসুস্থ হওয়ার প্রবণতা।
তীব্র গরমে অনেকেই শিকার হচ্ছেন হিটস্ট্রোকের। রাস্তাঘাটে চলতে গিয়ে প্রায়শই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন মানুষজন। তুলনমূলকভাবে বয়স্ক মানুষরা সহজেই এই হিটস্ট্রোকের শিকার হচ্ছেন।
এখন কথা হলো,
কি এই হিটস্ট্রোক?
হিটস্ট্রোক একপ্রকার জীবনসংশয়কারী অসুস্থতা, যা সচরাচর দেখা যায় প্রত্যক্ষভাবে সূর্যের সংস্পর্শে অনেকক্ষণ থাকলে।
এই হিটস্ট্রোক এতটাই ভয়ানক হতে পারে যে, তা দেহের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কাজের বিঘ্ন ঘটাতে পারে, এমনকি মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে।
হিটস্ট্রোক মানুষের শরীরে অকস্মাৎ আঘাত হানতে পারে যদি ঐ ব্যক্তি সূর্যের সংস্পর্শে অনেকক্ষণ থাকেন।
বয়স্ক মানুষরা সাধারণত অসুস্থ হলেও, যুবক-যুবতীদের অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনাও একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। দীর্ঘক্ষণ তীব্র গরমে ঘর্মক্ষরণ হতে থাকলেই বিপদের আশঙ্কা থেকে যায়।
কোনো মানুষ হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন তা কিভাবে বুঝবেন?
- আক্রান্ত মানুষের দেহের তাপমাত্রা প্রায় ১০৪°F (104°F) পর্যন্ত পৌঁছে যেতে পারে।
- সাময়িক ভারসাম্যহীনতা দেখা যেতে পারে এবং আক্রান্ত ব্যাক্তি অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন।বহুক্ষণ ঘর্ম ক্ষরণের পর অকস্মাৎ ওই ব্যাক্তি দুর্বল এবং অবচেতন হয়ে পড়তে পারেন।
- অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দন। এই ক্ষেত্রে হৃদস্পন্দন ১০০ bpm এর উপরে পর্যন্ত চলে যাওয়ার সম্ভবনা থাকতে পারে।
- অস্বাভাবিক ঘাম হওয়া।
এবার আসল কথা হলো, কিভাবে এই জীবনসংশয়কারী অসুস্থতাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে গরমকালে কিভাবে সুস্থ থাকা যায়?
আমাদের তরফ থেকে আপনার জন্য রইলো গরমে হিটস্ট্রোক থেকে বাঁচার ৫টি উপায়।
১. জল পান করুন নিয়ম করে
হিটস্ট্রোকের প্রধান কারণ হল শরীরে জলের ঘাটতি। তাই শরীরে যাতে কোনরকমেই জলের ঘাটতি না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।প্রচুর পরিমাণে জল পান করতে হবে নিয়ম করে।
শুধু জলই নয়, বিভিন্ন ধরনের ফলও, যেমন তরমুজ, শশা হিটস্ট্রোক রুখতে উপকারী।
বাদ দিতে হবে তেল-মশলা যুক্ত খাবার। শরীর সুস্থ রাখতে কম তেল- মশলা যুক্ত খাবারকে প্রাধান্য দিতে হবে।
রাস্তায় বেরোলে সঙ্গে যেন একটি জলের বোতল সব সময় থাকে।
২. সুতির জামাকে প্রাধান্য দিন
তীব্র গরমকে কুপোকাত করতে প্রাধান্য দিন ঢিলেঢালা সুতির পোশাককে। হালকা রঙের পোশাককে প্রাধান্য দেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
সিন্থেটিক পোশাক না পরাই বিচক্ষণতার লক্ষণ।
মনে রাখবেন পোশাক যেনো ঢিলেঢালা হয়, এতে শরীরের তাপ সঞ্চালনে সুবিধা হবে, তা ছাড়াও এর ফলে সঠিকভাবে ঘাম নির্গত হতে পারবে। মনে রাখবেন ঘাম নির্গমনে সমস্যা দেখা দিলেই শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
সাদা অথবা হালকা রঙের জামাকাপড় পড়ার চেষ্টা করুন। কালো এবং গাঢ় রঙের জামাকাপড় নৈব নৈব চ।
সাদা বা হালকা রঙের কাপড় সূর্যের আলোর বেশিরভাগটাই প্রতিফলিত করে, সুতরাং দেহের তাপমাত্রা বাড়ার সম্ভবনা অনেকাংশেই কমে যায়।
৩. বাড়ির বাইরে বেরোলে ছাতা অত্যাবশ্যক
চেষ্টা করবেন কাঠফাটা গরমে বাড়ির বাইরে না বেরোনোর। কিন্তু অগত্যা কোনো উপায় না থাকলে, অবশ্যই ছাতা নিয়ে বেরোন।
সঙ্গে রোদচশমা এবং টুপি সঙ্গে রাখুন। প্রয়োজন ছাড়া, দুপুরের দিকে বাড়ির বাইরে বেরোনোর চেষ্টা না করাই ভালো। পাখার নিচে অথবা এসির মধ্যে থাকার চেষ্টা করুন।
বাচ্চাদের বারণ করুন তীব্র রোদের মধ্যে বাড়ির বাইরে খেলতে যেতে।
খেলার সময় শরীর থেকে স্বাভাবিক মাত্রার থেকে বেশি ঘর্মক্ষরণ হয়, তার ওপরে যদি ঐ ব্যাক্তি তীব্র গরমের মধ্যে থাকেন, তাহলে হিটস্ট্রোক অনিবার্য।
তাই গ্রীষ্মকালে দুপুরের রোদকে এড়িয়ে চলাই শ্রেয়।
৪. অন্য কোনো রোগে আক্রান্ত থাকলে বাড়ি থেকে না বেরোনোর চেষ্টা করুন
যদি আপনি আগে থেকে কোনো কোনো রোগে অসুস্থ থাকেন, তাহলে দুপুরে বাড়ির বাইরে কোনোভাবেই না বেরোনোর চেষ্টা করুন।
হার্টের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যা থাকলে চেষ্টা করুন নিয়মিত ওষুধ খাওয়ার এবং ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলার।
৫. ইলেকট্রোলাইট ব্যবহার করুন
যদি কোনো ব্যাক্তি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন, তাহলে সত্বর তাকে ছায়ায় নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন এবং হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করুন।
প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে ওই ব্যক্তিকে ইলেকট্রোলাইট সেবন করানো যেতে পারে। শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে অতিরিক্ত লবণ বেরিয়ে যাওয়ার জন্য ইলেকট্রোলাইট সেবন অত্যন্ত উপকারী।
এই কয়েকটি উপায় মাথায় রাখলেই সহজে কাবু করা যাবে হিটস্ট্রোককে।
হিটস্ট্রোক জীবনসংশয়কারী অসুস্থতা হলেও যদি সঠিক সময়ে চিকিৎসা করা হয় এবং উপরোক্ত বিষয়গুলি মাথায় রেখে রাস্তায় বেরোনো যায়, তবে ভয় পাওয়ার কোনো কারণই নেই।
রাস্তায় কোনো অসুস্থ ব্যাক্তি দেখলে সত্বর তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করুন। সুস্থ থাকুন এবং অপরকে সুস্থ রাখুন।
[ Facebook এ update পেতে লাইক করুন আমাদের page ]
আরো লেটেস্ট খবর পড়ুন
- গাড়ি বা বাইকের ফিটনেস সার্টিফিকেট PDF ডাউনলোড প্রক্রিয়া ২০২৩
- গাড়ি বা বাইকের রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট (RC) ডাউনলোড প্রক্রিয়া ২০২৩
- RTO-তে করা আবেদনের স্টেটাস অনলাইনে কিভাবে চেক করবেন ২০২৩
- বাইক/গাড়ির নো অবজেকশন সার্টিফিকেট (এনওসি) ডাউনলোড পদ্ধতি ২০২৩
- দুর্গাপুর স্টিল টাউনশিপের বিদ্যুৎ সরবরাহ আংশিকভাবে বন্ধ থাকার বিজ্ঞপ্তি
- পশ্চিমবঙ্গ কাস্ট সার্টিফিকেট ডাউনলোড (PDF) অনলাইন প্রক্রিয়া ২০২৩
- কৃষক বন্ধু আইডি নাম্বার চেক (সার্চ) করার অনলাইন পদ্ধতি ২০২৩
- স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের জন্য অনলাইন আবেদন পদ্ধতি পশ্চিমবঙ্গ ২০২৩
- স্বাস্থ্য সাথী অনলাইন আবেদনের স্টেটাস চেক কীভাবে করবেন ২০২৩