চুল পড়া বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে অতি মাত্রায় বৃদ্ধি পাচ্ছে, এবং যদিও এটি আপনার স্বাস্থ্যের উপর সরাসরি শারীরিক প্রভাব ফেলতে পারে না, তবে মানসিক ভাবে ভীষন উল্লেখযোগ্য হতে পারে।
চুল পড়ার বিভিন্ন কারণ রয়েছে, যেমন, জেনেটিক্স, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, মাথার ত্বকের ছত্রাকের অবস্থা, স্ট্রেস, অটো ইমিউন রোগ এবং পুষ্টির ঘাটতি।
তবে এমন কিছু ঘরোয়া উপায় বা জিনিস রয়েছে যা আপনি প্রাকৃতিকভাবে আপনার চুল পড়া রোধে ও নতুন চুল গজানোর জন্য করতে পারেন।
আজ এই আর্টিকেলটিতে চুল পড়া রোধ করার এই গরোয়া উপায়গুলি সম্মন্দে জানতে পারবেন।
তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক…
১. অ্যালোভেরার কাৎ (ঘৃতকুমারী)
অ্যালোভেরাতে ভিটামিন এ, সি এবং ই রয়েছে।
এই তিনটি ভিটামিনই নতুন কোষের জন্মে অবদান রাখে, স্বাস্থ্যকর কোষের বৃদ্ধি এবং চকচকে চুলকে উন্নীত করে।
ভিটামিন B-12 এবং ফলিক অ্যাসিডও অ্যালোভেরা জেলে রয়েছে।
এই দুটি উপাদানই আপনার চুল পড়া থেকে রক্ষা করতে পারে।
অ্যালোভেরার ভিটামিনের উপাদান আপনার চুলের সূর্যের ক্ষতি মেরামত করতেও কাজ করতে পারে।
যখন আপনার মাথার ত্বক পরিষ্কার হয়ে যায় এবং আপনার চুলকে অ্যালোভেরা দিয়ে কন্ডিশন করা হয়, তখন আপনি দেখতে পাবেন যে চুল ভেঙ্গে যাওয়া, চুল পড়া এবং ক্ষতি অনেক পরিয়ামনে কমে গেছে।
কিভাবে অ্যালোভেরার কাৎ প্রয়োগ করবেন
- অ্যালোভেরার একটি বড় পাতা/ ডাঁটা নিন এবং পাল্প (কাৎ) বের করুন।
- এটি আপনার চুল এবং মাথার ত্বকে লাগান এবং প্রায় ৪৫ মিনিটের জন্য রেখে দিন।
- তারপর জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- ভালো ফল দেখতে সপ্তাহে তিন থেকে চারবার এটি ব্যবহার করতে পারেন।
২. আমলা গুঁড়ো
ইন্ডিয়ান গুজবেরি বা আমলা চুল পড়া বন্ধ করার আরেকটি কার্যকর ঘরোয়া প্রতিকার।
আমাদের চুল পড়ার একটি প্রধান কারণ হল ভিটামিন সি-এর অভাব, তাই আমলা খেলে চুলের ফলিকল মজবুত হবে এবং তা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে।
এর অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং এক্সফোলিয়েটিং বৈশিষ্ট্যগুলির জন্য আমলা চুলের দ্রুত বৃদ্ধি, স্বাস্থ্যকর মাথার ত্বক বজায় রাখতে এবং অকাল ধূসর হওয়া রোধ করতে সহায়তা করে।
কিভাবে আমলা গুঁড়ো প্রয়োগ করবেন
- আপনি লেবুর রস এবং আমলা গুঁড়ো মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করতে পারেন।
- এটি আপনার মাথার ত্বক এবং চুলে ম্যাসাজ করুন।
- আপনার মাথা ঢেকে একটি শাওয়ার ক্যাপ ব্যবহার করুন যাতে পেস্ট শুকিয়ে না যায়।
- এক ঘণ্টা রেখে তারপর স্বাভাবিক পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৩. পেঁয়াজের রস
পেঁয়াজের রস আসলেই চুল পূর্ণ করতে পারে।
পেঁয়াজের রস, একটি শক্তিশলী ঘরোয়া উপাদান যা আপনার মাথার ত্বকের কোষ এবং চুলের ফলিকলগুলিকে পুনরুজ্জীবিত করে চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে।
যেহেতু পেঁয়াজে উচ্চমাত্রার অ্যামাইনো অ্যাসিড রয়েছে ও সালফারের কারণে, বিশেষভাবে মাথার ত্বকে পেঁয়াজের রস প্রয়োগ করা প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড এবং বি ভিটামিন সরবরাহ করে যা কোষের পুনর্জন্মে সহায়তা করে (যা ফলস্বরূপ, চুলের ফলিকলগুলি পুনরুদ্ধার করে)।
কিভাবে পেঁয়াজের রস প্রয়োগ করবেন
- পেঁয়াজের রস বের করতে, পেঁয়াজ পিষে নিন এবং তারপর রস বের করে নিন।
- পেঁয়াজের রসে তুলো ডুবিয়ে আপনার মাথার ত্বকে লাগান।
- এটি ২০ থেকে ৩০ মিনিটের জন্য রেখে দিন এবং তারপরে সাধারণ জল এবং একটি হালকা শ্যাম্পু ব্যবহার করে ধুয়ে ফেলুন।
- সপ্তাহে একবার এই পদ্ধতি অনুসরণ করুন এবং পার্থক্য দেখুন।
৪. ডিমের চুলের মাস্ক
ডিম প্রোটিন, খনিজ এবং বি-কমপ্লেক্স ভিটামিন শক্তি-সমৃদ্ধ একটি ঘরোয়া বস্তু যা চুল পড়া রোধে খুব কার্যকরী।
এই পুষ্টি, বিশেষ করে বায়োটিন এবং অন্যান্য বি-কমপ্লেক্স ভিটামিন, আপনার চুলের শিকড়কে শক্তিশালী করে চুল পড়া রোধ করতে সাহায্য করতে পারে।
পুষ্টিগুলি নতুন চুলের বৃদ্ধিকে উদ্দীপিত করতে সাহায্য করে, এবং আপনার চুল ঘন করে।
প্রোটিন আপনার চুলকে মজবুত করতে সাহায্য করে এবং ঘন চুলের গঠন উন্নত করতে সাহায্য করে।
কিভাবে ডিমের চুলের মাস্ক প্রয়োগ করবেন
- একটি পাত্রে একটি ডিমের সাদা অংশ আলাদা করুন।
- একটি চা চামচ অলিভ অয়েল এবং মধু যোগ করুন।
- একটি পেস্ট তৈরি করুন এবং এটি চুলের ডোগা থেকে গোড়া পর্যন্ত সমস্ত জায়গায় প্রয়োগ করুন।
- ২০ মিনিট পরে, একটি হালকা শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৫. মেথি পেস্ট
মেথি বীজে উচ্চ প্রোটিন এবং নিকোটিনিক অ্যাসিড উপাদান রয়েছে, যা চুল পড়া এবং খুশকি রোধ করতে এবং চুলের শুষ্কতা, টাক পড়া এবং চুল পাতলা হওয়ার মতো মাথার ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার চিকিৎসায় সহায়তা করে।
কিভাবে মেথি পেস্ট প্রয়োগ করবেন
- ২ টেবিল চামচ মেথি বীজ জলে ভিজিয়ে রাখুন এবং একটি ঠাণ্ডা জায়গায় সারারাত রেখে দিন।
- একই জল ব্যবহার করে বীজগুলিকে একটি পেস্টে পিষে নিন, যা আঠালো এবং পিছল হয়ে উঠবে (এই পিচ্ছিল পদার্থটি আপনার চুলকে উজ্জ্বল করতে পরিচিত)।
- চুলের গোড়ায় লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে দিন।
- হালকা শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলার আগে মাথার ত্বকে একটু ম্যাসাজ করুন।
- সর্বোত্তম ফলাফলের জন্য সপ্তাহে অন্তত দুবার নিয়মটি পুনরাবৃত্তি করুন।
এইসমস্ত ঘরোয়া টোটকায় ফল পেতে হলে ধৈর্জ্য রাখতে হবে এবং এই সব পদ্ধতি পুনরাবৃত্তি করতে হবে।
তাছাড়াও স্বাস্থ্যকর খাবার, ভালো ঘুম ও নিরন্তর যোগ ব্যায়াম এর মধ্যে থাকতে হবে যা ভালো ত্বক ও চুলের চাবিকাঠি।
আরো লেটেস্ট খবর পড়ুন
- কল্পতরু মেলা (দুর্গাপুর) ২০২৪ – তারিখ, সময় এবং ইতিহাস
- শুরু হতে চলেছে হাওড়া পুরী বন্দে ভারত এক্সপ্রেস – জেনে নিন সময়সূচি
- দুর্গাপুর থেকে জয়পুর ও পাটনা ফ্লাইট পরিষেবা শুরু হচ্ছে মে মাসেই
- দুর্গাপুর স্টিল টাউনশিপের বিদ্যুৎ সরবরাহ আংশিকভাবে বন্ধ থাকার বিজ্ঞপ্তি
- সিউড়ি-অন্ডাল-শিয়ালদহ রুটে নতুন ট্রেন চালু হচ্ছে ১ আগস্ট থেকে
- দুর্গাপুরে নতুন ইন্টারনেট এক্সচেঞ্জ পয়েন্টের (IXP) চালু করা হলো