মহা মধ্যান ভোজন হবে…! থালা সাজিয়ে ৫ রকম ভাজা, নবরত্ন , নানান পদ, কচি পাঁঠার মাংস, পদ্মার ইলিশ, লাল দই, মিষ্টি। সাথে আম লিচু মাস্ট।
সুন্দর হাতের কাজ করা পাঞ্জাবী আর মালকুচি করা ধুতি পরে ও মিষ্টির হাঁড়ি নিয়ে জামাই হাজির হবে শশুর বাড়ী ।
হ্যাঁ ঠিক যে ধরেছেন “ঘটা করে জামাই ষষ্ঠী হবে…!”
জামাই ষষ্ঠী পার্বনটি সম্বন্ধে জানেন কি? কেন হয়, কিভাবে শুরু হয়, আজ এই আর্টিক্যালের দ্বারা জানাবো এই অনুষ্ঠানটির বৈশিষ্ট্য কি।
প্রথমত বলি,
ষষ্ঠী পুজো কেন দেয়া হয়?
কথিত আছে, অনেক দিন আগে এক গৃহবধূ তার স্বামীর বাড়ি থেকে মাছ চুরি করে খেত! ও বরাবর সে দোষ দিত যে একটা বিড়াল নাকি সেই মাছ চুরি করে খেত।
মা ষষ্ঠীর বাহন হল বিড়াল। দুনয়না, দিবুজা সর্বসুলক্ষণা ও গৌরবর্ণা, দেবী ষষ্ঠী রুষ্ট হয়ে সেই বধূর সন্তানদের কেড়ে নেন।
গৃহবধূ তার ভুল বুঝতে পেরে, অরণ্যে গিয়ে দেবী ষষ্ঠীর কাছে নিজের ভুল স্বীকার করে, ক্ষমা চেয়ে সন্তানদের প্রাণ ভিক্ষা চায়। দেবী তুষ্ট হয়ে তার সন্তানদের ফিরিয়েও দেন।
দেবীর আরেক নাম তাই অরণ্যষষ্ঠী।
সেই সময় থেকেই দেবীর ষষ্ঠীর পুজো প্রচলন হয় ও বিবাহিতরা তাদের সন্তানদের মঙ্গল কামনায় এই পুজো করেন। অনেকে সন্তান প্রাপ্তির ক্ষেত্রেও এই পুজো করে থাকেন।
তবে ভাবছেন,
জামাইদের উদ্দেশ্যে কেন করা হয় এই পুজো?
তবে বলি, পূর্বে দক্ষিণ এশিয়ার বহু জায়গায় এক সংস্কার ছিল যে, বিবাহিত মেয়েরা তার পিতার গৃহে আসতে পারবেননা যতক্ষন না সে সন্তানসম্ভবা হচ্ছেন। এর ফলে দীর্ঘ দিন কেটে যেত কিন্তু কন্যা ও তার মাতা পিতার সঙ্গে সংযোগ হতো না।
এই প্রথার সমাধান স্বরূপ তা আস্তে আস্তে বদলে হল যে, কন্যার মা ও বাবা মেয়ের শশুর বাড়িতে ১ বছর খাদ্য গ্রহণ করতে পারবেনা।
তবে জামাই ও মেয়ে তার বাবার গৃহে আসতে পারে। জামাই ও মেয়ে আসার কারণে বাড়িতে এক খুশির জোয়ার নেমে আসে এবং জামাই ও মেয়ের শুভ ও দ্রুত সন্তান কামনায় এই ষষ্ঠী দেবীর পুজোর ব্যবস্থা করা হয়।
জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রথম শুক্লা ষষ্ঠীর দিনটিকে বেছে নেওয়া হয় এই পুজোর জন্য ও শাশুড়ী রা খুব ঘটা করে জামাই এর হাতে হলুদ মাখানো শুতো পরিয়ে আশীর্বাদ করে। হিন্দু সমাজে এই উৎসবের মাহাত্ম অনস্বীকার্য।
জামাই ষষ্ঠী একটি লোকায়ত প্রথা যা কেউ কেউ ঘট স্থাপন করে করেন বা আঁকা ও প্রতিমায় পুজো নিবেদন করেন।
এই ছিল জামাই ষষ্ঠীর কাহিনী।
ভালো লাগলে আর্টিকাল টি সবার সাথে শেয়ার করে সবাইকে জানার সুযোগ করে দিন।