পুরীর জগন্নাথ ধাম ভারতের শ্রেষ্ঠ চার ধামের মধ্যে সব থেকে পুরোনো। এই ধামের কথা স্কন্দ পুরান,নারদ পুরান, ও ব্রহ্মা পুরান এ কথিত আছে।
পুরীর জগন্নাথ মন্দির শ্রীকৃষ্ণের অবতারের সব থেকে বড় মন্দির। এখানে তিনি দাদা বলরাম আর বোন সুভদ্রা কে নিয়ে বিরাজমান।
জানা গেছে ১২০০ খ্রিস্টাব্দে রাজা অনন্তবর্মন এই মন্দির এর নির্মাণ কাজে যুক্ত হন।
তবে সেই কালে এতো অভূতপূর্ব ও সমপূর্ণ হাতের কাজ মানুষের দৃষ্টি যেমন আকর্ষণ করেছিল তেমন ই এই মন্দিরের সঙ্গে কিছু রহস্যময় ঘটনাও দীর্ঘকাল মানুষের চোখে ধরা পড়েছে যা অতি আশ্চর্যের ও বিজ্ঞানের কাছে ব্যখাহীন।
চলুন দেখা যাক পুরীর মন্দিরের কিছু অস্বাভাবিক ঘটনাপুরীর মন্দিরের কিছু অস্বাভাবিক ঘটনা।
১. মন্দিরের শীর্ষে ধ্বজার বিপরীত দিকে উত্তোলন
আমরা সবাই জানি, যে কোনো হালকা বস্তু যেমন শুকোতে দেয়া জামা কাপড়, উত্তোলিত পতাকা,বা কাগজ ইত্যাদি সব বস্তু বায়ু প্রবাহের দিক নির্নয় করে।
কারণ তারা সেইদিকে ভাসমান যেই দিকে হাওয়া বইতে থাকে।
তবে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের ধ্বজা যা এক উচ্চতায় বইছে তা বায়ু প্রবাহের উল্টোদিকে বইতে থাকে। এই রহস্যের ভেদাভেদ করতে পারেনি বিজ্ঞান।
২. অষ্টধাতুর চক্রের দর্শকের দিকে সম্মুখীন
মন্দিরের শীর্ষে একটি চক্র আছে। যেটি মাটি থেকে ২০ ফিট উপরে অবস্থিত।
এই চক্রের অবস্থানটি এমন ভাবে আছে, যে, যে কোনো মানুষ পুরীর যে কোনো প্রান্ত থেকে দর্শন করুক না কেনো, সর্বদাই সেই চক্র দর্শকের দিকে সম্মুখীন থাকবে।

৩. দা “নো ফ্লাই” জোন
জগন্নাথ মন্দিরের উপরী ভাগের প্রাঙ্গন বা চত্বর অর্থাৎ ঠিক মন্দিরের উপরের আকাশে “NO FLY ZONE” হিসেবে সেভাবে কোনদিন নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি।
কিন্তু খুব বিস্ময়কর ঘটনা এটি যে মন্দিরের উপর দিয়ে কোনো কাক,পক্ষী, বা এরোপ্লেন ও হেলিকপ্টার এর মতো যানবাহন কখনোই যেতে বা উড়তে পারে না।
৪. মহাপ্রভুর ভোগ এর সঠিক পরিমাপে প্রাপ্তি
প্রতিদিন জগন্নাথ ধাম এর হাজার হাজার ভক্তদের সমাগম ঘটে।
কোনদিন যেমন জগন্নাথ দেব এর পুজো বা রথযাত্রা দিন, একটু বেশি ভিড় থাকে, তেমন ই অন্য দিন একটু কম, তবে গড়ে দেখা গেলে সারা বছর অনেক তীর্থ যাত্রীরাই আসেন এই জগন্নাথ ধামে।
তা সত্ত্বেও,বছরের ৩৬৫ দিন কিন্তু সমান পরিমাণ জগন্নাথ দেব এর ভোগ রন্ধন হয়,কোনোদিন ও তার প্রসাদ এক ফোটাও নষ্ট বা ফেলা যায়না, সব টুকু ভোগ ঠিক পরিমাপে ভক্তদের মধ্যে বিতরণ হয়ে যায়,কেউ অভুক্তও থাকে না।
৫. ৭টি পাত্রের রন্ধন রহস্য
জগন্নাথ দেব এর ভোগ রন্ধন করার জন্ন্য ৭টি পাত্র এর ব্যবহার করা হয় জেটি চুলহার উপর একটার উপর একটিকে বসানো হয়ে থাকে।
এই রন্ধন পদ্ধতির বৈশিষ্ট হলো রন্ধনাধির জন্য পাত্রের মধ্যে প্রসাদ বা ভোগ এর যে কোনো উপকরণ থাকা সত্ত্বেও,সব থেকে উপরের পাত্রের খাবার রান্না সবার আগেই তৈরী হয়।
৬. সিংহদুয়ার এর নিস্তব্ধতা
জগন্নাথ মন্দির থেকে পুরীর সমুদ্র অনেক নিকটে, খুব সহজেই সমুদ্রে কিনারে আছড়ে পড়া ঢেউ এর আওয়াজ শোনা যায়, কিন্তু মন্দিরের সদর দরজার মধ্যে প্রবেশ করলেই ঢেউ এর আওয়াজ শোনা যায় না কিন্তু সদর দরজার বাইরে বেরিয়ে এলেই পরিষ্কার শোনা যায় সমুদ্রের ঢেউ এর আওয়াজ।
বলা হয় সুভদ্রার চেয়েছেন সম্পূর্ণ নীরবতা তাই এই বিস্ময়কর ঘটনা ঘটে।

৭. মন্দিরের কোনো ছায়ার সৃষ্টি না হওয়া
পুরীর জগন্নাথ মন্দির প্রায় 4 লক্ষ বর্গ ফুট জায়গায় অবস্থিত ও উচ্চতায় ২১৪ ফুট , কিন্তু দিনের কোনো প্রহরেই এই মন্দিরের কোনো ছায়া পরে না।
এমনকি এই মন্দিরের শীর্ষে যে ধ্বজা আছে তা বদলানোর জন্য, সেই মানুষ টিকে ২১৪ ফুট দেয়াল উল্টো হয়ে চড়তে হয়।বলা হয় উল্টো চড়েই এই মন্দিরের ধ্বজা বদলানো সম্ভব।
সেই মন্দিরের শীর্ষ পতাকা যদি ১৮ দিন অন্তর বদলানো না হয় তবে মন্দিরের দুয়ার ১৮ বছরের জন্য বন্ধ হয়ে যাবে
৮. বিগ্রহের মাটির সাথে বিলীন হওয়া
প্রতি 12-14 বছর পর পর পুরোনো মূর্তি মাটির তলায় পুঁতে তার উপর নতুন মূর্তি তৈরি করা হয়।জানা গেছে এই মূর্তি গুলো নীম কাঠের তৈরি।
এই মূর্তি গুলো নিজেরাই মাটির সাথে মিশে গিয়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়।
৯. স্থলবায়ু ও জলবাযুর বিজ্ঞান
আমরা জানি দিনের সময় সমুদ্র থেকে হাওয়া স্থল এর দিকে বয় ও রাত্রে বেলা তা উল্টো হয়।
কিন্তু পুরী এমন একটি শহর যেখানে সমুদ্রবায়ু ও স্থলবায়ুর বিজ্ঞান সম্পূর্ণ উল্টো হয়ে যায়।
১০. পুরীতে প্রতিবছর বাঁধাধরা বৃষ্টি
প্রতি বছর রথ যাত্রার দিন ওড়িশার পুরী ও কিছু অঞ্চল এ বৃষ্টিপাত হয়, কোনো বছর ও বাদ যায়নি আজ পর্যন্ত, এই রহস্যের ব্যাখ্যা বিজ্ঞান দিতে পারেনি।
এই ১০ টি অলৌকিক ঘটনার বর্ণনা করতে পারেনি বিজ্ঞান।
নানান বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন এই সব রহস্যের যুক্তি খোঁজার চেষ্টা করেছে কিন্তু পাইনি।
তারা একাধারে সবাই মনে করেন এই সব ভগবানের মায়া ও লীলাখেলা ছাড়া অন্যত্র কিছু হতে পারেনা।
জগন্নাথ দেব এর ইচ্ছাতেই এই ঘটনা একই ভাবে ঘটে আসছে।
Cover Pic: Wikimedia
Source: Wikipedia, Youtube, India Today
[ Facebook এ update পেতে লাইক করুন আমাদের page ]
আরো লেটেস্ট খবর পড়ুন
- কল্পতরু মেলা (দুর্গাপুর) ২০২৪ – তারিখ, সময় এবং ইতিহাস
- নাম দিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স (DL) নম্বর কীভাবে খুঁজে পাবেন জেনে নিন
- ড্রাইভিং লাইসেন্স (DL) টেস্ট স্লট বুকিং করার অনলাইন পদ্ধতি 2024
- Vahan NR ই-পরিষেবা পোর্টাল কিভাবে রেজিস্ট্রেশন করবেন 2024
- Aadhaar Update History: কিভাবে চেক ও ডাউনলোড করবেন জানুন
- ভারতে ভোটার কার্ড সংশোধন করার অনলাইন পদ্ধতি (ফর্ম ৮)
- ড্রাইভিং লাইসেন্স অনলাইনে আবেদন ভারতে | DL Apply In Bengali
- লার্নার্স লাইসেন্স (LL): ভারতে অনলাইনে কীভাবে আবেদন করবেন 2024
- ডুপ্লিকেট ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য কীভাবে আবেদন করবেন 2024